কাবুলের বাদামবাগে শুরু হয়েছে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও হস্তশিল্পজাত পণ্যের ৩৩তম প্রদর্শনী। তালেবান শাসনে নানা বিধিনিষেধের মধ্যেও এবারের প্রদর্শনীতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে দৃষ্টি কেড়েছে।
নারীদের জন্য বরাদ্দ করা ৫৬টি স্টলে সাজানো হয়েছে হাতে তৈরি কার্পেট, জায়নামাজ, ঐতিহ্যবাহী বালিশ, গৃহসজ্জার সামগ্রীসহ নানা ধরনের পণ্য। স্টলগুলোতে নারী দর্শনার্থীদের পাশাপাশি পুরুষ ক্রেতারাও ভিড় করছেন।
হেরাত থেকে কাবুলের মেলায়
হেরাত থেকে আসা রোয়া বললেন, ‘এখানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি গর্বিত। নতুন নতুন ধারণা পাচ্ছি, আরও অনেক নারীও এখানে পণ্য এনেছেন। মনে হচ্ছে আমরা একসঙ্গে একটি নতুন পথ তৈরি করছি।’
হাতে গড়া কার্পেটের গল্প
অন্য উদ্যোক্তা ওয়াহিদা জানালেন, ‘আমাদের স্টলে পুরুষ-নারী সবাই আসছেন। আমরা যে কার্পেট, জায়নামাজ ও ঐতিহ্যবাহী বালিশ এনেছি, সবই হাতে তৈরি। মানুষ প্রশংসা করছে, এতে উৎসাহ আরও বাড়ছে।’
সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
অংশগ্রহণকারীদের মতে, এ প্রদর্শনী শুধু বিক্রির জায়গা নয়, বরং বাজার তৈরি ও নতুন চুক্তি করারও সুযোগ। ফল বিক্রেতা মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, ‘প্রথম দিন নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে লোকজন কম এসেছিল, আজ অনেক এসেছে। কোম্পানিগুলো চুক্তি করেছে, পণ্য বিক্রি হয়েছে। নারীরা যখন তাদের তৈরি জিনিস বিক্রি করছেন, তখন আমাদেরও উৎসাহ বাড়ছে।’
দর্শনার্থীদের গর্ব
দর্শনার্থী নাজনীন বলেন, ‘নারীদের পণ্য প্রদর্শন করতে দেখে গর্ব হয়। মনে হয়, আমাদের সমাজ এগোচ্ছে।’
অন্য এক দর্শনার্থী ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘প্রতিটি প্রদর্শনী নতুন কিছু নিয়ে আসে। দেশীয় পণ্য উন্নতি করছে, পরিবর্তন ঘটছে। এটা ভবিষ্যতের জন্য ভালো লক্ষণ।’
সরকারি তত্ত্বাবধান
কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শের মোহাম্মদ হাতামি বলেন, ‘প্রদর্শনী আরও দুই দিন খোলা থাকবে। নাগরিকরা এসে তাদের পছন্দের পণ্য কিনতে পারবেন।’
চার দিনব্যাপী এ আয়োজনে ২৬৩টি স্টল রয়েছে, যেখানে কৃষিপণ্য, দুগ্ধজাত দ্রব্য, প্রাণিসম্পদ ও হস্তশিল্পজাত পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
শেষকথা
তালেবান শাসনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও কাবুলের এই প্রদর্শনী নারীদের জন্য হয়ে উঠেছে আশা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। রোয়া বা ওয়াহিদার মতো উদ্যোক্তারা প্রমাণ করেছেন—সুযোগ পেলে নারীরা শুধু ঘরেই নয়, সমাজ ও অর্থনীতিতেও সমান ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
বাদামবাগ প্রদর্শনী তাই আজ নারীদের উজ্জ্বল পদচারণার প্রতীক, যা গোটা আফগানিস্তানের জন্য এক আশার আলো।
প্রতিবেদন: টোলো নিউজ
অনুবাদ : আতাউল্লাহ নাবহান মামদুহ
হাআমা/